ঢাকা ০৮:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকার হাজারো লোকজন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ২৬৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব মির্জাগঞ্জ এসএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে তালতলী খালের ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দুইটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকার হাজারো লোকজন। পারাপার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত কেউ না কেউ খালে পড়ে আহত হচ্ছে। বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের চলাচল করতে হচ্ছে।

তালতলী খালটির পূর্বে খরস্রোতা পায়রা নদীর সঙ্গে মিলে গেছে। পায়রা নদীর জোয়ার কিংবা অমাবশ্যা বা পূর্ণিমার জোয়ারের সময়ে তালতলী খালটি তার আসল রূপ ফিরে পায়। এমনকি কোনো ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের হলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এতে তালতলীর খাল উপচে বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে যায়। একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

বর্ষা মৌসুমে কোনোমতেই সাঁকো দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হয় না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তবুও চলাচল থেমে থাকে না। এ নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরীজীবী, হাট-বাজারের লোকজন পারপার হচ্ছে। এমনকি উত্তর পাড়ের মানুষ এবং দক্ষিণ পাড়ের মানুষের দৈনন্দিন কাজের জন্য সাঁকো পার হয়ে যেতে সহজে হয়। প্রায় ২৫০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকোটি পারাপার হতে গিয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিশু, রোগী, বৃদ্ধা নারী-পুরুষ ও গর্ভবতী মহিলারা।

তাছাড়াও খালের উভয় পাশের মানুষ তাদের উৎপাদিত খাদ্যেশস্য-কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন প্রকার কাঁচামাল স্থানীয় বাজার কিংবা দূরের কোনো হাটে নিয়ে আসতে অসুবিধায় সম্মুখীন হন। অন্যদিকে স্কুলে যাতায়াতের সময় কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা এক হাতে বই ও পায়ের জুতা নিয়ে পার হতে দেখা যায়। এতে ঝুঁকিময় সাঁকো দিয়ে অনেকটা ভীতির মধ্যে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান।

স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, বিদ্যালয়টি খালের তীরবর্তী হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা বাঁশের সাঁকো পারাপার হলেও যেকোনো সময়ে সাঁকোটি ভেঙে বড় কোনো দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। শিক্ষক রনজিৎ চন্দ্র ঢালী বলেন, পায়রা নদীর পার দিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। নদী যে হারে ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এসব এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বেড়িবাঁধ ভাঙনের কারণে জোয়ারের সময়ে একবারেই চলাচল করা যায় না। এখানে সাঁকোর পরিবর্তে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে শিক্ষার পাশাপাশি জীবনমান উন্নয়ন হবে।

পূর্ব মির্জাগঞ্জ এসএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আবদুস সালাম বলেন, বিদ্যালয়ের পিছনে তালতলী খালের ওপর নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে দুইটি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে ছোট ছোট কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের পারাপার হতে অসুবিধায় পড়তে হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ওই সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ চলাচল করছে।

অনেক সময়ে পথচারীরা পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তবে মির্জাগঞ্জে যতগুলো বাঁশের সাঁকো রয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করে এলজিইউডি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত তালতলী খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকার হাজারো লোকজন

আপডেট টাইম : ০৪:১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব মির্জাগঞ্জ এসএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে তালতলী খালের ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দুইটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকার হাজারো লোকজন। পারাপার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত কেউ না কেউ খালে পড়ে আহত হচ্ছে। বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের চলাচল করতে হচ্ছে।

তালতলী খালটির পূর্বে খরস্রোতা পায়রা নদীর সঙ্গে মিলে গেছে। পায়রা নদীর জোয়ার কিংবা অমাবশ্যা বা পূর্ণিমার জোয়ারের সময়ে তালতলী খালটি তার আসল রূপ ফিরে পায়। এমনকি কোনো ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের হলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এতে তালতলীর খাল উপচে বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে যায়। একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

বর্ষা মৌসুমে কোনোমতেই সাঁকো দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হয় না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তবুও চলাচল থেমে থাকে না। এ নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরীজীবী, হাট-বাজারের লোকজন পারপার হচ্ছে। এমনকি উত্তর পাড়ের মানুষ এবং দক্ষিণ পাড়ের মানুষের দৈনন্দিন কাজের জন্য সাঁকো পার হয়ে যেতে সহজে হয়। প্রায় ২৫০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকোটি পারাপার হতে গিয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিশু, রোগী, বৃদ্ধা নারী-পুরুষ ও গর্ভবতী মহিলারা।

তাছাড়াও খালের উভয় পাশের মানুষ তাদের উৎপাদিত খাদ্যেশস্য-কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন প্রকার কাঁচামাল স্থানীয় বাজার কিংবা দূরের কোনো হাটে নিয়ে আসতে অসুবিধায় সম্মুখীন হন। অন্যদিকে স্কুলে যাতায়াতের সময় কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা এক হাতে বই ও পায়ের জুতা নিয়ে পার হতে দেখা যায়। এতে ঝুঁকিময় সাঁকো দিয়ে অনেকটা ভীতির মধ্যে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান।

স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, বিদ্যালয়টি খালের তীরবর্তী হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা বাঁশের সাঁকো পারাপার হলেও যেকোনো সময়ে সাঁকোটি ভেঙে বড় কোনো দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। শিক্ষক রনজিৎ চন্দ্র ঢালী বলেন, পায়রা নদীর পার দিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। নদী যে হারে ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এসব এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বেড়িবাঁধ ভাঙনের কারণে জোয়ারের সময়ে একবারেই চলাচল করা যায় না। এখানে সাঁকোর পরিবর্তে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে শিক্ষার পাশাপাশি জীবনমান উন্নয়ন হবে।

পূর্ব মির্জাগঞ্জ এসএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আবদুস সালাম বলেন, বিদ্যালয়ের পিছনে তালতলী খালের ওপর নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে দুইটি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে ছোট ছোট কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের পারাপার হতে অসুবিধায় পড়তে হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ওই সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ চলাচল করছে।

অনেক সময়ে পথচারীরা পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তবে মির্জাগঞ্জে যতগুলো বাঁশের সাঁকো রয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করে এলজিইউডি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত তালতলী খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।